ই-সেবা

পছন্দের কিছু লিংক

গুরুত্বপূর্ণ সরকারি লিংকসমূহ

 
 
 
পশু পাখী পালন
ডেইরি ফার্মে স্বাবলম্বী

আমাদের দেশে চাহিদার তুলনায় দুধের উৎপাদন কম। ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে আপনিও পারেন এ খাত থেকে আয় করতে। ডেইরি ফার্মের জন্য জমি নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। দশটি গাভীর একটি খামারের জন্য কমপক্ষে এক বিঘা জায়গা প্রয়োজন হবে। জমি নির্বাচনের পর আসে ঘর তৈরির পালা।
ঘরের আকার নির্ভর করে মূলত গাভীর সংখ্যার ওপর। দশটি গাভীর জন্য এক সারিবিশিষ্ট ঘরের আকার হবে ৫০ ফুট বাই ২০ ফুট। দুই সারিবিশিষ্ট ঘর করলে আকার হবে ৩০ ফুট বাই ৪০ ফুট। উভয় ক্ষেত্রে ভূমি থেকে ছাদের উচ্চতা কমপক্ষে ১২ ফুট হতে হবে। ঘরের মেঝে কোনোভাবেই মসৃণ করা যাবে না। ঘরের এক পাশে দুধ দোয়ানোর জন্য আলাদা জায়গা রাখতে পারলে ভালো। সব মিলিয়ে দশটি গাভীর জন্য ঘর তৈরি করতে দেড় থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হবে।


 

গাভী রাখার পদ্ধতি: এক সারিবিশিস্ট ঘরে গাভীগুলো এক সারিতে দাঁড়াবে। গাভীর পেছনে থাকবে পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা। দুই সারিবিশিষ্ট ঘরে গাভী দুভাবে রাখা যায়। ‘ফেস টু ফেস’ পদ্ধতিতে গাভীগুলো সামনাসামনি দাঁড়াবে। তাদের সামনে থাকবে খাবার দেয়ার ব্যবস্থা। দুই সারির মাঝখানে খামারির চলার পথ থাকবে। দুই সারির গাভীর পেছনেই পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে হবে। ‘টেল টু টেল’ পদ্ধতিতে গাভীরা পরস্পরের বিপরীত দিকে ফিরে দাঁড়াবে।


মূলধন: উদ্যোক্তার সুষ্ঠু পরিকল্পনা তৈরি করার পর প্রয়োজন মূলধনের। মূলধন মূলত নির্ভর করে পরিকল্পনার ওপর। তা না হলে বিভিন্ন সরকারি যেমন সোনালী, জনতা, কৃষি ইত্যাদি সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকগুলো ডেইরি ফার্মের ওপর সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে থাকে।
গাভী নির্বাচন: ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠার জন্য গাভীর জাত নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত জাতের গাভী দুধ বেশি দেয় বলে খামারি লাভবান হন। আমাদের দেশে ভালো জাতের গাভীর মধ্যে রয়েছে হলস্টিন, ফ্রিজিয়ান, রেড সিন্ধি, রেড চিটাগাং, পাবনা ব্রিড, শাহিওয়াল প্রভৃতি। বাছুর বড় হয়ে গেলে বিভিন্ন ডেইরি ফার্ম তাদের বিক্রি করে দেয়। জাতভেদে গাভীর দাম ওঠানামা করে। বিদেশি উন্নত জাতের গাভী হলস্টিন, ফ্রিজিয়ান, রেড সিন্ধি প্রতিটির দাম ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকার মধ্যে। দেশি জাতের গাভী রেড চিটাগাং, পাবনা ব্রিড, শাহিওয়াল প্রতিটির দাম ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা।


বাজারজাতকরণ : ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করার আগেই দুধ বাজারজাতকরণের স্বচ্ছ পরিকল্পনা করতে হবে। তবে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ বেশি হলে সরকারি-স্বায়ত্ত শাসিত প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটায় সরবরাহ করতে পারেন। এ ছাড়া বেসরকারি দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান যেমন আড়ং, প্রাণ, আরডি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে পারেন।
আয়-রোজগার : ডেইরি ফার্মের আয় মূলত উৎপাদিত দুধ ও বাছুর থেকে আসে। বয়স্ক গাভী বিক্রি করেও আয় করা যায়। একটি গাভীর দুধ দেয়ার পরিমাণ ছয় মাস পর থেকে আস্তে আস্তে কমতে থাকে এবং আট মাস পর্যন্ত দুধ দোয়ান সম্ভব হয়। ১০ লিটার দুধ দিচ্ছে এমন একটি গাভী থেকে প্রতি মাসে গড়ে ছয় থেকে নয় হাজার টাকা আয় করা যায়।       


প্রশিক্ষণ
ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করার আগে প্রশিক্ষণ নিতে পারলে ভালো। দেশের প্রতিটি জেলায় বাংলাদেশ সরকারের যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। সেখানে গবাদিপশু পালনের ওপর আড়াই মাসের আবাসিক কোর্স চালু আছে। এখানে কোনো কোর্স ফি নেই। চাইলে আপনিও এ প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। এ জন্য আপনাকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে কিংবা সরাসরি যুব প্রশিক্ষণ একাডেমীতে যোগাযোগ করতে হবে
তথ্য: মানব কন্ঠ