গ্রামাঞ্চলে হাঁস অর্ধ আবদ্ধ পদ্ধতিতে লালন-পালন করা হয়। পুকুর, খাল-বিল, নদী ইত্যাদিতে হাঁস চড়ে বেড়ায় এবং সেখান থেকেই তারা খাদ্য জোগাড় করে খেয়ে থাকে। আর এসব এলাকা থেকে প্রাপ্ত খাদ্যের উপরই এদের উৎপাদন নির্ভর করে। আবার অনেক খামারি প্রাকৃতিক খাদ্যের পাশাপাশি গম ভাঙা, চালের কুড়া, গমের ভূষি ইত্যাদি খেতে দেন। তবে দেখা গেছে বেশিরভাগ খামারিদেরই হাঁসের জন্য সুষম খাদ্য তৈরি ও খাওয়ানোর পদ্ধতির সম্পর্কে সঠিক ধারনা নেই। ফলে পরবর্তীতে হাঁসের ডিম উৎপাদন কমে যায়। আবার ডিম পাড়ার সময় অধিক হারে পুষ্টি ডিমের মাধ্যমে চলে যায় বলে কিছু দিন পরে দেখা যায় হাঁসের ওজন কমে যাচ্ছে।
নিচে বিভিন্ন বয়সের হাঁসের জন্য সুষম খাদ্য তৈরির একটি ফরমুলা দিচ্ছিঃ
*টেবিল-১:
খাদ্য উপাদান (%) |
বাচ্চা হাঁস(০-৬ সপ্তাহ) |
বাড়ন্ত হাঁস (৭-১৯ সপ্তাহ) |
ডিম পাড়া হাঁস (২০ সপ্তাহ থেকে তদুর্ধে) |
গম ভাঙা |
৩৬.০০ |
৩৮.০০ |
৩৬.০০ |
ভুট্টা ভাঙা |
১৮.০০ |
১৮.০০ |
১৬.০০ |
চালের কুঁড়া |
১৮.০০ |
১৭.০০ |
১৭.০০ |
সয়াবিন মিল |
২২.০০ |
২৩.০০ |
২৩.০০ |
প্রোটিন কনসেনট্রেট |
২.০০ |
২.০০ |
২.০০ |
ঝিনুক চূর্ণ |
২.০০ |
২.০০ |
৩.৫০ |
ডিসিপি |
১.২৫ |
১.২৫ |
০.৭৫ |
ভিটামিন প্রিমিক্স |
০.২৫ |
০.২৫ |
০.২৫ |
লাইসিন |
০.১০ |
০.১০ |
০.১০ |
মিথিওনিন |
০.১০ |
০.১০ |
০.১০ |
লবণ |
০.৩০ |
০.৩০ |
০.৩০ |
মোট |
১০০.০০ |
১০০.০০ |
১০০.০০ |
এসব খাদ্য উপাদান পোল্ট্রির খাদ্য বিক্রেতার কাছে পাবেন। আর যদি তাও না পান তবে আরো সহজে কিভাবে খাদ্য তৈরি করতে পারবেন, তাও বলে দিচ্ছি-
ডিম পাড়ার আগেঃ
*টেবিল-২:
খাদ্য উপাদান
|
পরিমান (%)
|
গম ভাঙা |
৪৫ |
চালের কুঁড়া |
২০ |
গমের ভুষি |
১২ |
তিলের খৈল |
১২ |
শুটকি মাছের গুঁড়া |
১০ |
লবন |
০.৫ |
ভিটামিন |
০.২৫ |
মোট |
১০০ |
ডিম পাড়া শুরুর ২ সপ্তাহ আগে থেকে শেষ পর্যন্তঃ
*টেবিল-৩:
খাদ্য উপাদান
|
পরিমান (%)
|
গম ভাঙা |
৪০ |
চালের কুঁড়া |
২৫ |
গমের ভুষি |
৫ |
তিলের খৈল |
১২ |
শুটকি মাছের গুঁড়া |
১০ |
ঝিনুক ভাঙা |
৭.২৫ |
লবন |
০.৫ |
ভিটামিন |
০.২৫ |
মোট |
১০০ |
খাওয়ানোর নিয়মঃ বর্ষা মৌসুমে অর্ধছাড়া অবস্থায় পালনকৃত বাচ্চা হাঁসকে দৈনিক ৪০ গ্রাম এবং বয়স্কগুলোকে ৬০ গ্রাম হারে সুষম খাদ্য দিতে হবে। তবে শুষ্ক মৌসুমে প্রাকৃতিক খাদ্যের পরিমান কমে যায় বলে এসময় ছেড়ে খাওয়ানোর পাশাপাশি ৭০ থেকে ৮০ গ্রাম খাদ্য সরবরাহ করা দরকার। তবে প্রাকৃতিক খাদ্য না দিতে পারলে খাকী ক্যাম্পবেল হাঁসকে দৈনিক ১৭৬ গ্রাম হারে এবং জিন্ডিং হাঁসকে দৈনিক ১৬০ গ্রাম হারে খাদ্য দিতে হবে।
*তথ্য সূত্রঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ তথ্য দপ্তর, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত বার্ষিক প্রাণিসম্পদ সংকলন (জৃন-২০১২)।