ই-সেবা

পছন্দের কিছু লিংক

গুরুত্বপূর্ণ সরকারি লিংকসমূহ

 
 
 
পশু পাখী পালন
কোয়েল পাখির খামার গড়ে কোটিপতি

কোয়েল পাখির খামার গড়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন নরসিংদীর পল্লী চিকিৎসক দিদার আলম। মাত্র ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগে কোয়েল পাখি পালন করে ১২ বছরের ব্যবধানে তিনি এখন কোটিপতি।

দিদার আলম নরসিংদীর পলাশ উপজেলার পলাশের চর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক। ২০০২ সালে শখের বশে তার স্কুলপড়ুয়া ছেলে খাঁচায় একজোড়া কোয়েল পাখি পালন শুরু করে। দুটো পাখির প্রতিদিনের ডিম দেখে কোয়েল পাখি পালনের ইচ্ছা জাগে দিদার আলমের।

 


সেই ইচ্ছা থেকেই তিনি নরসিংদী সদর উপজেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান মো. এবায়েদ হোসেনের কাছে থেকে ৬শকোয়েল পাখির বাচ্চা সংগ্রহ করেন। গড়ে তোলেন কোয়েল পাখির খামার। 

২০ হাজার টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করে গড়ে তোলা এই খামারে প্রথম বছরেই ব্যাপক লাভবান হন তিনি। এরপর প্রতি বছরই খামারের পরিধি বাড়তে থাকে। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে ২০ হাজার কোয়েল পাখি। প্রতিদিন পাওয়া যাচ্ছে কয়েক হাজার ডিম। এসব ডিম থেকে চারটি নিজস্ব ইনকিউবেটরের মাধ্যমে উৎপাদন করছেন ২০ হাজারের অধিক বাচ্চা।

শুধুমাত্র কোয়েল পাখির বাচ্চা ও ডিম বিক্রি করেই কোটিপাতি হয়েছেন তিনি। গড়েছেন তিনতলা বাড়ী।

দিদার আলম বলেন, অল্প পুজি, কম ঝুঁকি, কম সময় এবং খুব অল্পস্থানেই এই পাখি পালন করা যায়। এক বর্গফুট জায়গায় ১টি মুরগির স্থলে কোয়েল পাখি পালন করা যায় ৬টি। ঠান্ডা ছাড়া তেমন কোন রোগ-বালাই কোয়েল পাখির বেলা দেখা যায় না।

তিনি জানান, একটি পাখি দৈনিক মাত্র ১ টাকা ২০ পয়সার খাবার খায় আর ১টি ডিম বিক্রি হয় ২ টাকা। এভাবে কোন পরিবার যদি মাত্র ২ হাজার কোয়েল পাখি পালন করে তাহলে সকল খরচ বাদ দিয়ে ১২ থেকে ১৪ শত টাকা আয় করা সম্ভব।

দিদার বলেন, আমি এই ১২ বছরে কোয়েল পাখির খামার দিয়ে কোটি টাকা ব্যয় করে একটি তিন তলা একটি বাড়ি নির্মাণ করেছি। যার ছাদেই আমার এই পাখির খামার। আমার একটি খামারেই রয়েছে ১০ হাজারের মতো পাখি। পাশের গ্রামের আরেকটি খামারেও রয়েছে আরো ১০ হাজার পাখি। বাড়ির খামার থেকে দৈনিক ৮-৯ হাজার ডিম পাই। প্রতিদিনই ২০-২৫ জন হকার ডিম নিয়ে যান, সিদ্ধ করে হাটে-বাজারে বিক্রি করেন। অপর খামারের ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুটাই।

তিনি বলেন, একটি বাচ্চা ২ মাস বয়স থেকে ডিম দেয়া শুরু করে। ডিম দেয় একাধারে ১৮ মাস পর্যন্ত।
দিদার আলমের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, তার সহধর্মিনী আনোয়ারা খানম ডলি খামারের সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত। আরো ৫-৭ জন রয়েছেন সহযোগি হিসেবে।

স্বামীর কোয়েল পাখির খামারের সফলতা দেখে খুশি দিদারের স্ত্রী ডলি বেগমও। খামারের বর্জ্য থেকে তৈরি করা হয়েছে বায়োগ্যাস। গ্রামীণ শক্তির সহায়তায় এই গ্যাসে চলছে রান্নার কাজ। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত প্রাণী সম্পদ মেলায় একাধিক পুরস্কার লাভ করেছে দিদারের এই কোয়েল পালন প্রকল্প।


পলাশ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুবোধ কুমার দাস বলেন, দিদারের কোয়েল পাখির খামারটি এলাকায় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাকে দেখে এখন এলাকায় কোয়েল পালনের ব্যাপক সাড়া পড়েছে।