ই-সেবা

পছন্দের কিছু লিংক

গুরুত্বপূর্ণ সরকারি লিংকসমূহ

 
 
 
কৃষি উদ্যোগ
কলা চাষে সফল ঈশ্বরদীর কৃষক কলা ময়েজ

 

ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের বড়ইচরা গ্রামে ময়েজ উদ্দিন কৃষি খামারে কলা চাষ করে সফল হয়েছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত কৃষক ছিদ্দিকুর রহমান ময়েজ। মাত্র ১০ টাকা পুঁজি নিয়ে অন্যের জমি বাকিতে লিজ (খাজনা) নিয়ে কৃষি কাজে নেমে পেঁপে চাষ শুরু করেন। দিন-রাত তিনি মাঠে থেকে পরিশ্রম করে গাছের পরিচর্যা করে ফসল ফলাতে থাকেন। প্রথম বারেই তার খামারের চাষকৃত পেঁপের বাম্পার ফলন হয়। এরপর থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তিনি দেশে বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের একত্রিত করে এক মঞ্চে হাজির করেছেন বলে তিনি একথা জানান। 

২০০৪ সালে গ্রীষ্মকালীন ৭০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপণ করে দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করার কারণে তার নামের সাথে পেঁয়াজ যোগ হয়ে পেঁয়াজ ময়েজ খেতাব পান। এর কয়েক বছর পর বাংলাদেশে প্রথম হাইব্রীড ধনেপাতা চাষ করার ফলে ধনিয়া ময়েজ উপাধি পান তিনি। ২০১০ সালে ১২০ বিঘা জমিতে বাউকুল চাষ করে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক পেয়ে কুল ময়েজ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ঠিক একইভাবে এবার তার খামারে ১৫ হাজার রঙিন সাগর কলা চাষ করার ফলে কলা ময়েজ খেতাব লাভ করেছেন। ময়েজ উদ্দিন কৃষি খামারে বাউকুল, পেঁয়ারা, পেঁপে, স্ট্রবেরী, মালটা, লাউ, চালকুমড়া, বেগুন, ধনেপাতা, কপি চাষের পাশাপাশি এবারই প্রথম শুরু করেছেন রঙিন সাগর কলা চাষ। ময়েজ উদ্দিন কৃষি খামারে ১৫ হাজার কলা গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। ১৫ হাজার কলা গাছের মধ্যে বর্তমানে পাঁচ হাজার গাছে কলা ফলেছে। কলার কাদিগুলো এমনভাবে পড়েছে যা উপস্থিত সকলের দৃষ্টি জুড়িয়ে যায়।

প্রথমে বাউকুল বা পেঁয়ারা চাষে পরিত্যক্ত জায়গাতে কলা গাছ লাগানো শুরু করেন। এরপর তিনি বাণিজ্যিকভাবে কলা চাষে তার খামারে কলাগাছ লাগাতে থাকেন। ময়েজ উদ্দিন কৃষি খামারের রঙিন সাগর কলা গাছ ও কলার কাদি দেখে ঈশ্বরদীর অনেক কৃষক এখন কলা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। ময়েজ বলেন, বিভিন্ন ধরনের ফলমূল ও সবজি চাষের কারণে পেঁয়াজ ময়েজ, ধনিয়া ময়েজ, কুল ময়েজ এবং সর্বশেষ কলা ময়েজ খেতাব লাভ করেছি। সেই সাথে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক, রাষ্ট্রপতি পদক ও সেনাপদকসহ বিভিন্ন পদক পেয়েছি। দেশের খাদ্য ও পুষ্টির কথা চিন্তা করে কলা চাষ শুরু করি। ময়েজ উদ্দিন কৃষি খামারের কলা গাছে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। তার কলা চাষ দেখে ঈশ্বরদী ও আশপাশের কৃষক পরামর্শ নিয়ে কলা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমি একা বড় হতে বা খেতাব পেতে চাই না দেশের সকল কৃষককেই আমার মতো খেতাব পাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। তাহলে দেশ ফলে ফুলে ভরে যাবে বিদেশ থেকে আর ফল আমদানি করে দেশের টাকা নষ্ট করতে হবে না। দেশের কৃষকদের সংগঠিত করতে এবং তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সমিতি গঠন করেছেন বলে তিনি জানান। এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবক ও ছাত্রদের কলা চাষে প্রশিক্ষণের পর তাদের কলা গাছের বীজ, সার এবং সকল ধরনের উপকরণ বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। সেই সাথে যাদের কলা গাছ ভালো হবে এবং কলা সুন্দর হবে তাদেরকে পুরস্কার প্রদান করা হবে বলেও তিনি একথা জানান।