ই-সেবা

পছন্দের কিছু লিংক

গুরুত্বপূর্ণ সরকারি লিংকসমূহ

 
 
 
কৃষি উদ্যোগ
স্বল্পমেয়াদি ধানচাষে অতিরিক্ত ১ কোটি টন ধান উৎপাদন সম্ভব

মাসুম বিল্লাহ মাগুরা
জলবায়ু পরিবর্তনসহ সেচনির্ভর চাষাবাদের কারণে আউশ ধান হারিয়ে যাচ্ছে। মাগুরাসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে আউশ মওসুমে উদ্ভাবিত ধানের মধ্যে পারিজা, বিরি-২৭, বিরি-৫৬, বিরি-৫৭, চেহেরাং, সি আর-৪০ ধানের চাষাবাদ শুরু করেছে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। দেশীয় জলবায়ু উপযোগী সদ্য উদ্ভাবিত উন্নত জাতের এ ধানচাষের মাধ্যমে আউশ মওসুমে অতিরিক্ত এক কোটি টন ধান উৎপাদন করা সম্ভব। যা দেশের কৃষকদের আর্থিকসহ জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ মওসুমে অনেক জমি পতিত পড়ে থাকে। এ সময়ে উদ্ভাবিত ধানচাষের মাধ্যমে শুধু আউশ মওসুমে দেশের ৩৫ লাখ হেক্টর জমি থেকে প্রায় এক কোটি টন অতিরিক্ত ধান উৎপাদন সম্ভব। যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট- ইরি ইতোমধ্যে মাগুরাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় আবহাওয়া উপযোগী একাধিক উন্নত জাতের ধানচাষের উদ্যোগ নিয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় মাগুরা সদর উপজেলার আলমখালীতে কৃষক করিদুল ইসলামের সাতটি ব্লকসহ একাধিক প্রদর্শনী প্লটে চাষ হয়েছে এসব ধান। উদ্ভাবিত ধানের মধ্যে পারিজা, বিরি-২৭, বিরি-৫৬, বিরি-৫৭, চেহেরাং, সি আর-৪০ উল্লেখযোগ্য।
বর্ষা মওসুমে পড়ে থাকা পতিত জমিতে আউশের নতুন জাতের ধানেরচাষ এবং ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকেরা উপকৃত হবেন, তা ছাড়া এ মওসুমে বেশি সেচ ও সার দেয়ার প্রয়োজন না হওয়ায় উৎপাদন খরচ হয় অর্ধেক। এ ধানের ভাত সুস্বাধু ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন হওয়ায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে জেনে এ নতুন ধানচাষে আগ্রহী হয়েছি বলে কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, উদ্ভাবিত ধানের মধ্যে বেশ কয়েকটি জাত আছে যা বেশি লম্বা হওয়ায় বন্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে তেমন ক্ষতি হয় না। তা ছাড়া অল্প সেচ ও সার ব্যবহারে মাত্র ৯০ থেকে ১০০ দিনে কৃষকেরা ধান ঘরে তুলতে পারায় তারা লাভবান হবেন। সারা দেশে এ ধানের আবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে প্রায় এক কোটি টন অতিরিক্ত ধান উৎপাদন সম্ভব হবে। যা দেশের মোট চাহিদার অর্ধেক।
কনসালট্যান্ট, ইরি, ইউএসএ আইভি, ঢাকা ড. জি এম নিয়োগী ধান ক্ষেত পরিদর্শনে এসে জানান, স্বল্পমেয়াদি আউশ ধানের ভালো জাত ইতিপূর্বে ছিল না। বর্তমানে কয়েকটি স্বল্পমেয়াদি জাতের আউশ ধান উদ্ভাবন হয়েছে। যা আউশ মওসুমে চাষ করে কম সময়ে হেক্টর প্রতি ৩ থেকে সাড়ে ৩ মেট্রিকটন ফলন পাওয়া সম্ভব হবে। দেশব্যাপী এ ধানের চাষ ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।