ই-সেবা

পছন্দের কিছু লিংক

গুরুত্বপূর্ণ সরকারি লিংকসমূহ

 
 
 
কৃষি উদ্যোগ
টবে শাক-সবজি চাষ

বাংলাদেশের জনসংখ্যা দিনদিন যে হারে বাড়ছে সে হারে বাড়ছে না জমি, ফলে স্থানীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করার কোন বিকল্প নেই। সেলক্ষ্যে বাড়িতে টবে সবজি ও ফুল-ফলের চাষ ইদানিং বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে চাষের অভাবে ভাল ফলন পাওয়া যায় না তাই সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে খুব সহজে টবে সবজি ও ফল  চাষ করা যায়। বাড়ির ছাদে বা কোন সুবিধাজনক স্থানে টবে বিভিন্ন সবজি ও ফলের চারা লাগিয়ে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা সহজেই পূরণ করা যায়।

টবে আবাদ যোগ্য সবজি ও ফসল: 
যেসব সবজি সংখ্যায় কম লাগে এবং একবার লাগিয়ে ক্রমাগত অনেকদিন ধরে খাওয়া যায় সেই সমস্ত সবজিরই আবাদ টবে করা উচিত। টবে আবাদযোগ্য সবজি টমেটো, বেগুন, মরিচ, শসা, ঝিংগা, মিষ্টি কুমড়া, মটরশুটি, কলমি, কলমি শাক, লাউ, পুইশাক, লেটুস, ধনেপাতা, পুদিনা, থানকুনি, তুলসী ও ইত্যাদি। টবে আবাদ যোগ্য ফল হলো পেঁপে, আম, আমড়া, পেয়ারা, ডালিম ও ইত্যাদি।

টবে সবজি চাষ পদ্ধতি: 
গাছের আকার ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন সাইজের টব ব্যবহার করতে হবে। টবের নিচে তিনটি ছিদ্র থাকে। এই ছিদ্রগুলোর উপর ইটের টুকরো বা মাটির চারা বসানোর পর টবের তলায় প্রথম ১ ইঞ্চি ইটের সুরকি বা খোয়া, তার উপরে ১ ইঞ্চি পঁচা গোবর সার দিতে হবে যাতে সহজেই অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যেতে পারে। টবে গাছ লাগানোর আগে ২ ভাগ দো-আঁশ মাটি ও ১ ভাগ পঁচা গোবর সার এবং এর সঙ্গে ১০০ গ্রাম টিএসপি ও ৫০ গ্রাম এমওপি সার ভালভাবে মিশিয়ে টব ভর্তি করে ১০ থেকে ১২ দিন রেখে দিতে হবে। তবে গাছের ধরণ ও টবের আকার-আকৃতির উপর ভিত্তি করে সারের পরিমান কিছুটা কম বেশি হতে পারে। টবে মাটি ভরাট করার সময় টবের উপর দিক থেকে ১ ইঞ্চি খালি রাখবে হবে। টবের ঠিক মাঝখানে চারা লাগাতে হবে।

স্থায়ী টবে পেয়ারা, লেবু ডালিম, কামরাঙ্গা, কমলা, আম্রপলি, আঙ্গুর, শরিফা, আতা, জাম, জামরুল, কদবেল, জলপাই, এসব ফলের চারা লাগিয়ে অধিক লাভবান হওয়া যায়। টবে ফল গাছ লাগিয়ে সাথী ফসল হিসাবে ভেষজগুনে সমৃদ্ধ থানকুনি ও পুদিনা ফলানো যায়। গাছের বিশেষ ব্যবস্থার জন্য মাটির পাত্র বা প্লাস্টিকের ড্রামে সরিষা বা তিলের খৈল পরিমানমত পানি দিয়ে ৫ থেকে ৭ দিন ভিজিয়ে পচাতে হবে। এরপর পচা খৈলের সঙ্গে পানি মিশিয়ে মাধ্যমে তরল তৈরি করতে হবে। এই তরল ১৬ ইঞ্চি টবের জন্য আধা লিটার পরিমান ১৫ দিন পর পর নিয়মিত প্রয়োগ করতে হবে। ছাদের গাছে কাক্সিক্ষত আকারে রাখা ও ফলন বেশি পাওয়ার জন্য অঙ্গ ছাটাই করা প্রয়োজন। তাই গাছের ফল সংগ্রহের পর পর প্রতি বছর অতিরিক্ত ডালপালা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ছাটাই করতে হবে। টব ও স্থায়ী বেডের গাছের মূল শিকড় থেকে শাখা প্রশাখা বের হয়ে জালের মতো সৃষ্টি করে। এসব প্যাচানো শিকড় মাটি থেকে তুলনামূলক কম খাদ্যরস সংগ্রহ করতে পারে। ফলে গাছের বাড়তি ও ফলন কমে যায়। এজন্য টবের গাছের বেলায় শিকড় ছাটাই করতে হবে। প্রয়োজনে জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে এবং নিয়মিত পানি দিতে হবে।