ই-সেবা

পছন্দের কিছু লিংক

গুরুত্বপূর্ণ সরকারি লিংকসমূহ

 
 
 
কৃষি উদ্যোগ
ঘরেই ফলবে রঙিন টমেটো

রসালো ফল অথবা সবজি- যাই বলি না কেনরান্নায় অথবা সালাদে টমেটোর জুড়ি নেই। টক-মিষ্টি এই ফলটি পাকা এবং কাঁচা দুই অবস্থাতেই খাওয়ার উপযোগী। তবে টমেটোর একটা বেশ বড় অসুবিধে হল বাজার থেকে কিনে এনে এটা বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায় নাফ্রিজে বেশিদিন রাখলেও পানসে হয়ে যায়। সস বা পিউরি করে রেখে দিতে পারেন ডিপ ফ্রিজে কিন্তু সবচাইতে ভালো বুদ্ধি হল আপনার বাড়ির বারান্দায় একটু জায়গা বের করে নিয়ে একটা টবে টমেটো চাষ করা!

রোপণের সময় ও প্রস্তুতি-
মধ্য অগাস্ট থেকে শুরু করে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত টবে লাগাতে পারেন এই গাছ। টমেটো চাষ করতে হলে প্রথমেই আপনার যা লাগবে তা হল বেশ বড়সড় একটা টব। টমেটো গাছটা হয় বেশ ঝোপালো এবং এর মূলের প্রসার এবং বৃদ্ধির জন্য লাগে অনেকটা মাটি। এক থেকে দুই বর্গফুট টব অথবা পাঁচ গ্যালন পানি ধরে এমন পুরনো বালতি এর জন্য বেশ উপযুক্ত। এর পরে এই টবের নিচের অংশে কিছু পরিমাণ খোয়া বিছিয়ে নিন যাতে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায়। এরপর টবের এক তৃতীয়াংশ মাটি দিয়ে ভরে দিতে হবে।
টমেটো গাছ জন্মানোর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন এর মাটির ক্ষেত্রে। পুরনো টবের মাটি বা বাইরে থেকে নিয়ে আসা নোংরা মাটি ব্যবহার না করাই ভালো। এগুলোতে রোগজীবাণু থাকলে সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে আপনার গাছটি। নার্সারিতে পাওয়া যেতে পারে টবের জন্য প্রস্তুতকৃত বিশেষ মাটি এবং ভার্মিকম্পোস্ট। এগুলো দিয়ে তৈরি করতে পারেন টবের মাটি।

রোপণ পদ্ধতি ও যত্ন-
টমেটো লাগাতে পারেন দুইভাবে।
প্রথমত, আপনি নার্সারি থেকে চারা নিয়ে এসে আপনার বড় টবটিতে লাগিয়ে নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে টবের মাটিকে নিড়ানি দিয়ে খুঁচিয়ে আগে থেকেই বেশ ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। এরপর যে প্লাস্টিকে মোড়ানো অবস্থায় আপনার চারাটি কিনে এনেছেন সেটাকে সাবধানে মাটি থেকে ছাড়িয়ে নিতে হবে। লক্ষ্য রাখবেন যেন এতে চারাটির মূলের কোনও ক্ষতি না হয়। এরপর টবের মাটিতে বেশ গভীর গর্ত করে তাতে চারাটি বসিয়ে দিন ও মাটি ভরে দিন কাণ্ডের চারপাশে। এই চারাটিতে বেশ করে পানি দিতে হবে কিন্তু লক্ষ্য রাখুন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি যেন না হয়।

দ্বিতীয়
 একটি উপায় হলোটমেটোর বীজ থেকে গাছ গজানো। বাড়ির বাগানে বেশি করে টমেটো গাছ লাগাতে চাইলে এটি করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে আগে ভালো জাতের বীজ কিনে নিতে হবে। এর পর টবের আর্দ্র মাটিতে ছিটিয়ে দিতে হবে বীজগুলোকে। অঙ্কুরোদ্গমের পর চারাগুলো বড় হতে শুরু করলে এগুলোকে রাখুন বেশ আলো আসে এমন স্থানে এবং কোনভাবেই যেন এগুলোতে পানির অভাব না হয় তার দিকে লক্ষ্য রাখুন। কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা রোদ খাওয়াতে হবে আপনার গাছগুলোকে৮ ঘণ্টা হলে ভালো হয়।
১.আপনার গাছ যখন বেড়ে ওঠা শুরু করবে তখন টবের প্রায় পুরোটাই মাটি দিয়ে ভরে দিন। এতে গাছ ভালো বাড়বে।
২. টমেটো গাছের যত্নে প্রয়োজনীয় একটি পদক্ষেপ হলো টবে একটি খুঁটি পুঁতে তার সাথে গাছটিকে বেঁধে দেওয়া যাতে এর কাণ্ড বাঁকা না হয়ে যায়।
৩.এছাড়াও একে নেট দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন, তাতে পোকামাকড় কম হবে।
৪.গাছের বয়স ছয় সপ্তাহ হবার পর প্রতি সপ্তাহে একটু করে সার দিতে পারেন গাছের গোড়ায়।
৫.বেশি শীত এবং গরমের সময় মাটিকে রক্ষা করতে দিতে পারেন শুকনো পাতা বা বাড়ির শাকসবজির উচ্ছিষ্ট খোসা দিয়ে। এতে সারেরও কাজ হবে এবং তাপমাত্রার নেতিবাচক প্রভাব থেকে গাছের মূল রক্ষা পাবে।


এত রকমের যত্ন নিতে হয় বলে অনেকেই টমেটো লাগাতে চান না। অথচ এসবের পর গাছ ভরে যখন রঙ বেরঙের ফল আসবেতখন কেমন খুশি লাগবে ভাবুন তো!

সূত্র: লাইভ ২৪ বিডি